২. ব্যাংক-কোম্পানী আইন, ১৯৯১, ধারাবাহিক আলোচনা; ২য় ধাপ- ধারা ৭ থেকে ধারা ৯
১৯৯১
সনের ১৪ নং আইন হচ্ছে ব্যাংক-কোম্পানী আইন,
১৯৯১, যাতে একটি ব্যাংকের জন্ম থেকে বেড়ে
উঠা, তার চালচলন ও বিসৃতি, পারিপার্শ্বিক অবস্থায় তার আচরণ, তার ভিতর ধারন করা
প্রত্যেকটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ধারাবাহিক সহাবস্থান ও সমৃদ্ধি ইত্যাকার সম্পর্কে বিশদ
বর্ণনা নিহিত।
ব্যাংকারদের জ্ঞান সমৃদ্ধির অংশ হিসেবে উক্ত আইনের ধারাবাহিক
আলোচনার ২য় ধাপ। যেখানে আইনের ধারাবাহিকতায় বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর কিভাবে
আইনে প্রদান করা হয়েছে তারই ধারাবাহিক আলোচনা করা হয়েছে। আজকের আলোচনায় ধারা ৭
থেকে ধারা ৯ পর্যন্ত কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়েছে।
প্রশ্ন সমুহঃ
১. ব্যাংকের কার্যাবলী কোন কোন ক্ষেত্রে নিহিত?
(ধারা ৭)
২. কোন কোন কার্যাবলীতে ব্যাংক অংশগ্রহণ
করতে পারবে না? (ধারা ৭)
৩. “ব্যাংক” শব্দের
ব্যবহার কে বা
কারা করতে পারবে বা পারবে না? (ধারা ৮)
৪. কোন কোন ব্যবসায় ব্যাংক-কোম্পানী
আইন, ১৯৯১ দ্বারা নিষিদ্ধ করা হয়েছে? (ধারা ৯)
১. ব্যাংকের কার্যাবলী কোন কোন ক্ষেত্রে
নিহিত?
ব্যাংক-কোম্পানী আইন,
১৯৯১ এর ধারা ৭ এর
১ অনুযায়ী
(১)
ব্যাংক-ব্যবসা (ধারা ৫ এর ৩) ছাড়াও, কোন ব্যাংক-কোম্পানী নিম্নবর্ণিত সকল বা যে কোন ব্যবসায় নিয়োজিত হইতে পারিবে, যথা:-
(ক)
ঋণ গ্রহণ,
অর্থ সংগ্রহ বা গ্রহণ;
(খ)
জামানত লইয়া বা জামানত ব্যতিরেকে অগ্রিম অর্থ বা কর্জ প্রদান;
(গ)
বিনিময় বিল,
হুণ্ডি, প্রতিশ্রুতিপত্র, কূপন,
ড্রাফ্ট, বহনপত্র,
রেলওয়ে রশিদ,
ওয়ারেন্ট, ঋণপত্র, সার্টিফিকেট, মেয়াদী অংশগ্রহণ-পত্র,
মেয়াদী অর্থ সংস্থান-পত্র,
মুশারিকা সার্টিফিকেট, ২৭[ মুদারাবা] সার্টিফিকেট এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত অনুরূপ অন্যান্য দলিল,
এবং হস্তান্তর বা বিনিময়যোগ্য হউক বা না হউক এমন অন্যান্য দলিল ও
সম্পত্তি নিদর্শন-পত্র,
ক্ষেত্রমত, সম্পাদন, লিখন,
দাবী প্রস্তুতকরণ, বাট্টাকরণ, ক্রয়,
বিক্রয়, সংগ্রহ এবং লেনদেন;
(ঘ)
লেটার অব ক্রেডিট, ট্রাভেলার্স চেক, ২৮[ ব্যাংক কার্ড] এবং সার্কুলার নোট অনুমোদন ও
ইস্যু করা;
(ঙ)
স্বর্ণ, রৌপ্য ও
অন্যান্য ধাতব মুদ্রা ক্রয়,
বিক্রয় এবং লেনদেন;
(চ)
বিদেশী ব্যাংক নোটসহ বৈদেশিক মুদ্রা ক্রয় এবং বিক্রয়;
(ছ)
ষ্টক, তহবিল, শেয়ার,
ডিবেঞ্চার-ষ্টক,
বন্ড, দায় সম্পত্তি নিদর্শন-পত্র,
মেয়াদী অংশগ্রহণ-পত্র,
মেয়াদী অর্থ সংস্থান-পত্র,
মুশারিকা সার্টিফিকেট, ২৯[ মুদারাবা] সার্টিফিকেট এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত অন্যান্য দলিল ও
সর্বপ্রকার বিনিয়োগ গ্রহণ, ধারণ,
কমিশন ভিত্তিতে প্রেরণ, এবং উহাদের দায় গ্রহণ ও
লেনদেন;
(জ)
বন্ড, স্ক্রিপ বা অন্যান্য প্রকারের সম্পত্তি নিদর্শন পত্র যথা,
মেয়াদী অংশগ্রহণ-পত্র,
মেয়াদী অর্থ সংস্থান-পত্র,
মুদারাবা সার্টিফিকেট, মুশারিকা সার্টিফিকেট এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক অনুমোদিত অন্যান্য অনুরূপ দলিল,
সরকারের পক্ষে বা অন্যান্যদের পক্ষে ক্রয় ও
বিক্রয়;
(ঝ)
ঋণ ও
অগ্রিমের বন্দোবস্ত করা;
(ঞ) সর্বপ্রকার বন্ড ও
মূল্যবান সামগ্রীর আমানত গ্রহণ বা উহাদিগকে নিরাপদ হেফাজতে বা অন্যভাবে রাখিবার জন্য গ্রহণ;
(ট)
গচ্ছিত বস্তুর নিরাপত্তার জন্য ভল্টের ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ঠ)
সম্পত্তি নিদর্শন-পত্রের বিপরীতে টাকা সংগ্রহ ও
প্রেরণ;
(ড)
সরকার, স্থানীয় কর্তৃপক্ষ বা অন্য কোন ব্যক্তির প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করা;
(ঢ)
কোন কোম্পানী ব্যবস্থাপক প্রতিনিধি এবং কোষাধ্যক্ষ হিসাবে কাজ করা ব্যতীত,
গ্রাহকদের প্রতিনিধি হিসাবে মালামাল খালাস ও
প্রেরণ এবং আমমোক্তার হিসাবে কাজ করাসহ যে কোন ধরনের এজেন্সি ব্যবসা পরিচালনা;
(ণ)
সরকারী এবং বেসরকারী ঋণের ব্যাপারে আলাপ আলোচনা ও
চুক্তি সম্পাদন এবং উক্ত ঋণ প্রদান;
(ত)
কোন কোম্পানী,
কর্পোরেশন বা সমিতির শেয়ার,
ষ্টক, ঋণপত্র বা ডিবেঞ্চার-ষ্টক বিতরণে ঝুঁকি গ্রহণ, নিশ্চয়তা প্রদান ও
দায়গ্রহণ এবং উক্তরূপ কোন কাজের জন্য ঋণ প্রদান;
(থ)
যে কোন প্রকার জামিন এবং ক্ষতি নিস্কৃতি ব্যবস্থা সংক্রান্ত ব্যবসা পরিচালনা এবং উক্তরূপ ব্যবসায়ে লেনদেন;
(দ)
স্বাভাবিক ব্যাংক-ব্যবসা পরিচালনাকালে-
(১)
বিক্রেতা কর্তৃক পুনঃ ক্রয়,
বা
(২)
ভাড়ায় খরিদ পদ্ধতিতে বিক্রয়,
বা
(৩)
বিলম্বে মূল্য পরিশোধ, বা
(৪)
ইজারা, বা
(৫)
আয় ভাগাভাগি,
বা
(৬)
অন্য কোনভাবে অর্থ সংস্থান,
এর ব্যবস্থাসহ বা অনুরূপ ব্যবস্থা ব্যতিরেকে পণ্য,
পেটেন্ট, ডিজাইন, ট্রেডমার্ক এবং গ্রন্থস্বত্বসহ যে কোন সম্পত্তি ক্রয় বা অর্জন;
(ধ)
ব্যাংক-কোম্পানীর কোন দাবীর আংশিক বা সম্পূর্ণ পরিশোধের জন্য কোন সম্পত্তি দখলে গ্রহণ বা অনুরূপ সম্পত্তির উদ্ধার ও ব্যবস্থাপনা;
(ন)
কোন ঋণ বা অগ্রিমের জামানতের সম্পত্তি বা জামানত সংশ্লিষ্ট সম্পত্তি এবং উক্ত সম্পত্তি সম্পর্কিত অধিকার, স্বত্ব বা স্বার্থ অর্জন, ধারণ এবং উহাদের ব্যবস্থাপনা;
(প)
ট্রাষ্টের দায়িত্ব গ্রহণ ও
উহার বাস্তবায়ন;
(ফ)
নির্বাহক বা ট্রাষ্টি হিসাবে বা অন্যভাবে স্থাবর ও
অস্থাবর সম্পত্তির পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ;
(ব)
ব্যাংক-কোম্পানীর কর্মচারী বা প্রাক্তন কর্মচারী বা তাঁহাদের পোষ্যগণের কল্যাণার্থে-
(১) সমিতি,
প্রতিষ্ঠান, তহবিল, ট্রাষ্ট অথবা অন্য কোন সংস্থা স্থাপন এবং উহাদের স্থাপনকল্পে সাহায্য বা সহযোগিতা প্রদান;
(২)
পেনশন ও
ভাতা প্রদান;
(৩)
বীমার প্রিমিয়াম প্রদান;
(৪)
কোন প্রদর্শনী বা সাধারণভাবে উপকারী কোন কাজে চাঁদা প্রদান;
(৫)
ঐসব ব্যাপারে অর্থ সরবরাহ নিশ্চিত করা;
(ভ)
উহার প্রয়োজন বা সুবিধার্থে ইমারত বা এইরূপ অন্যকিছু অর্জন, নির্মাণ,
রক্ষণাবেক্ষণ এবং উহার পরিবর্তন সাধন;
(ম)
উহার সমুদয় সম্পত্তি বা অংশ বিশেষ বা উহার কোন অধিকার বিক্রয়, উন্নয়ন,
ব্যবস্থাপনা, বিনিময়, ইজারা প্রদান, বন্ধকে রাখা বা অন্যবিধ উপায়ে হস্তান্তরকরণ বা টাকায় রূপান্তরকরণ বা অন্য কোন উপায়ে উক্ত সম্পত্তি বা অধিকার সম্পর্কে ব্যবস্থা গ্রহণ;
(য)
এই উপ-ধারায় বর্ণিত ব্যবসার প্রকৃতির সহিত মিল থাকিলে,
কোন ব্যক্তি বা কোম্পানীর ব্যবসা বা ব্যবসার কোন অংশ অর্জন এবং উহার দায়িত্ব গ্রহণ;
(র)
উহার ব্যবসায়ের উন্নয়ন ও
অগ্রগতি সাধনের জন্য আনুষংগিক ও সহায়ক অন্যান্য সকল কাজকর্ম সম্পাদন;
(ল)
সরকার কর্তৃক সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা অন্য যেসব ব্যবসা ব্যাংক-কোম্পানী কর্তৃক করা যাইতে পারে বলিয়া নির্দিষ্ট করা হয় সেই সকল ব্যবসায়৷
২. কোন কোন কার্যাবলীতে ব্যাংক অংশগ্রহণ
করতে পারবে না?
ব্যাংক-কোম্পানী আইন,
১৯৯১ এর ধারা ৭
এর ২ ও ৩ অনুযায়ী
(২) কোন ব্যাংক-কোম্পানী উপ-ধারা
(১) এ উল্লিখিত ব্যবসায় ব্যতীত অন্য কোন ব্যবসায়ে নিয়োজিত হইতে পারিবে না৷
(৩) উপ-ধারা
(১) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, ধারা ২৬ এর বিধান সাপেক্ষে,
কোন ব্যাংক-কোম্পানী স্টক-ব্রোকার, স্টক-ডিলার, মার্চেন্ট
ব্যাংকার, পোর্টফোলিও
ম্যানেজার হিসাবে বা
সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ
কমিশন হইতে নিবন্ধন
গ্রহণের প্রয়োজন পড়ে
এইরূপ কোন ব্যবসায়ে সরাসরি লিপ্ত হইতে পারিবে না।
৩. “ব্যাংক” শব্দের
ব্যবহার কে বা
কারা করতে পারবে বা পারবে না?
ব্যাংক-কোম্পানী আইন,
১৯৯১ এর ধারা ৮
অনুযায়ী
বাংলাদেশে
ব্যাংক-ব্যবসায়ে নিয়োজিত প্রত্যেক কোম্পানী উহার নামের অংশ হিসাবে
"ব্যাংক" শব্দটি
অথবা ইহা হইতে উদ্ভূত অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করিবে এবং ব্যাংক-কোম্পানী ব্যতীত [ অন্য কোন কোম্পানী কিংবা প্রতিষ্ঠান] ইহার নামের অংশ হিসাবে এমন কোন শব্দ ব্যবহার করিবে না যাহাতে উহাকে ব্যাংক-কোম্পানী হিসাবে মনে করিবার অবকাশ থাকে।
তবে, বাংলাদেশ ব্যাংকের সম্পূর্ণ বা আংশিক মালিকানাধীন বা নিয়ন্ত্রণাধীন কোন কোম্পানীকে উহা ব্যাংক কোম্পানী না হইলেও,
সরকার, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, এবং তত্কর্তৃক নির্দ্ধারিত শর্ত সাপেক্ষে,
উহার নামের অংশ হিসাবে
“ব্যাংক” বা উক্ত শব্দ হইতে উদ্ভূত অন্য কোন শব্দ ব্যবহার করিবার জন্য অধিকার দিতে পারিবে৷
“ব্যাংক” শব্দের
ব্যবহার কে বা
কারা করতে পারবে না?
ব্যাংক-কোম্পানী আইন,
১৯৯১ এর ধারা ৮
এর ক ও খ অনুযায়ী
(ক) [ ধারা ২৬] এ
উল্লিখিত এক বা একাধিক উদ্দেশ্যে গঠিত কোন ব্যাংক-কোম্পানীর সাবসিডিয়ারী কোম্পানী;
(খ)
ব্যাংকসমূহের পারস্পরিক স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে গঠিত কোন সমিতি,
যাহা কোম্পানী আইনের [ ধারা ২৮] এর অধীনে নিবন্ধনকৃত:
৪. কোন কোন ব্যবসায় ব্যাংক-কোম্পানী
আইন, ১৯৯১ দ্বারা নিষিদ্ধ করা হয়েছে?
ব্যাংক-কোম্পানী আইন,
১৯৯১ এর ধারা ৯
অনুযায়ী
ধারা
৭ এর অধীন অনুমোদিত ব্যবসা ব্যতীত,
কোন ব্যাংক-কোম্পানী,
উহাকে প্রদত্ত বা উহা কর্তৃক রক্ষিত জামানত আদায়ের ক্ষেত্র ছাড়া,
প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কোন পণ্যের ক্রয়,
বিক্রয় বা বিনিময় ব্যবসা করিবে না,
অথবা আদায় বা কারবারের জন্য প্রাপ্ত বিনিময় বিল সংক্রান্ত কারণ ব্যতীত, অন্যের জন্য কোন ব্যবসায় বা কোন পণ্য ক্রয়, বিক্রয় বা বিনিময়ে লিপ্ত হইতে পারিবে না [ তবে শর্ত থাকে যে, ইসলামী শরীয়াহ মোতাবেক
পরিচালিত ব্যাংক কোম্পানী কর্তৃক প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে স্বীকৃত ইসলামী পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক মালামাল বা পণ্য ক্রয়, বিক্রয় বা বিনিময়ের ক্ষেত্রে এই ধারার কোন কিছুই প্রযোজ্য হইবে না৷]
ব্যাখ্যা- এই ধারার উদ্দেশ্য পূরণকল্পে “পণ্য”
অর্থ, আদায়যোগ্য দাবী,
ষ্টক, শেয়ার, টাকা পয়সা, স্বর্ণ-রৌপ্য [ ও
অন্যান্য ধাতু এবং ধারা ৭ এর উপ-ধারা
(১) এর দফা
(গ), (ঘ), (ছ)
ও (জ) এ
উল্লিখিত সকল দলিল দস্তাবেজ ব্যতীত, সকল প্রকারের অস্থাবর সম্পত্তি] ৷
উপস্থাপনায়ঃ Banking Info BD-BIB
No comments